অর্থপাচার যৎসামান্য : সংসদে অর্থমন্ত্রী

0
316

Sharing is caring!

বিদেশে অর্থপাচার এবং সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থপাচার নিয়ে দেশে অনেক সমালোচনা হলেও অর্থমন্ত্রী এটিকে যৎসামান্য বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এই অর্থপাচারকে লেনদেন এবং সম্পদের হিসাব বলেও দাবি করেন তিনি।

- Advertisement -

মন্ত্রী বলেন, টাকা পাচারের বিষয়টি বাস্তবে তেমন কিছু নয়। যে হিসাবগুলো কাগজে বেরিয়েছে এগুলো হলো লেনদেন এবং সম্পদের হিসাব। আমাদের সাংবাদিকরা এটিকে অত্যন্ত অন্যায়ভাবে পাচার বলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, সত্যিই কিছু পাচার হয় কিন্তু এটি যৎসামান্য। এটা নজর নেয়ার মতোই নয়।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় সংসদের সভাপতিত্বে ছিলেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা পাচারের বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্ট ইউনিট অতিরিক্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং তা বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে।

তিনি বলেন, বিদেশে অর্থ যে পাচার হয় না, সে কথা আমি বলব না। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে যে পরিমাণ অর্থ প্রচার হয়েছে বলে বলা হয়েছে সেটা বাস্তবেই অতিশয়োক্তি বলে বিবেচনা করা চলে। তিনি বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য মোটামুটি বিভিন্নভাবে ব্যাংকের মাধ্যমে হয়। সুইজারল্যান্ডেও আমাদের যথেষ্ট লেনদেন আছে, ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনেক উন্নত। ফলে নিকটস্থ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের দেনা পাওনার হিসাব নিষ্পত্তি সুইস ব্যাংকের মাধ্যমেও হয়।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে সম্পূর্ণ প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আমরা দেখেছি যে, সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের কারণে অনেক লেনদেন হয়েছে এবং ২০১৬ সালের হিসাব এখন মোটামুটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের খাতে ২০১৬ সালে সুইস ব্যাংকগুলোর সম্পদের পরিমাণ ১৮শ ২৩ কোটি টাকা। এই সময়ে তাদের দেনা হচ্ছে ৫ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৮’শ ২৩ কোটি টাকা তারা ঋণ দিয়েছে এবং তাদের কাছে জমা হয়েছে ৫ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। এতে দেখা যায় যে ২০১৫ সালে বাংলাদেশে সুইস ব্যাংকের যে দেনা ছিল সেটা এই বছরের দেনার চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম। একইভাবে ২০১৬ সালে বাংলাদেশের খাতে যে সম্পদ ছিল তার থেকে ২০১৬ সালে ২ শতাংশ কমে গেছে।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যাংকগুলোর ২০১৬ সালের হিসাব বিশেষ করে দেনার ক্ষেত্রে এখনও পুরোপুরি চূড়ান্ত হয়নি। আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো আমাদের এবং সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোর মধ্যে দেনা পাওনার পরিমাণ খুব বেশি। এতে অবশ্য ব্যক্তির আমানত অথবা দেনা মোট আমানত ও দেনার হিসাবে সীমিত একটি অনুপাত। ৩৯৯.৮ কোটি টাকার আমানতের ব্যক্তিখাতের দেনা হলো মোট দেনার মাত্র ৭ শতাংশ। আর সম্পদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিখাতে মোট সম্পদ ১৮শ ২৩ কোটির টাকার মধ্যে মাত্র ১৮৩ কোটি টাকা অর্থাৎ ১০ শতাংশ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, আমাদের এবং সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে যে ব্যবসা-বাণিজ্যের হিসাব হয় সেটি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাস্তবে এটি মোটেই অর্থপাচার নয়।

তিনি বলেন, এ ব্যাখ্যাটি আমাদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাবে বলে আমার বিশ্বাস। এসব হিসাবে বাংলাদেশি অনেক নাগরিক আছে যারা ব্যক্তিখাতে কাজ করেন অথবা স্থায়ীভাবে অবস্থান করেন, তাদের হিসাবও অন্তর্ভুক্ত আছে। তাদের হিসাবে কত টাকা অন্তর্ভুক্ত আছে সেই হিসাব আমরা দিতে পারছি না। কেননা যেসব বাঙালি এসব টাকা জমা রাখছেন তারা বাংলাদেশি পাসপোর্ট পরিচয় চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এদের সংখ্যা আমাদের জানা নেই।

(Visited 3 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here