রোহিঙ্গাদের সমর্থনকারী ফেসবুক পোস্ট কারা ডিলিট করছে?

0
305

Sharing is caring!

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপরে সহিংসতা আর তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার নানা ছবি, পোস্ট, ভিডিও সামাজিক মাধ্যমগুলি থেকে মুছে ফেলার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

- Advertisement -

সৌদি আরবে বসবাসরত এক রোহিঙ্গা মুসলমান নেতা শাহ হুসেইন সেদেশ থেকেই প্রচার প্রচারণা চালান রোহিঙ্গাদের সমর্থনে।

২০১০ সাল থেকে তিনি একটি ফেসবুক পেজও চালান। কিন্তু তিনি দাবী করছেন, গত কয়েকদিন ধরে তার সেসব পোস্ট আর ছবি ডিলিট করে দেওয়া হচ্ছে, যেগুলোতে রোহিঙ্গাদের ওপরে সহিংসতার বর্ণনা আর মন্তব্য ছিল।

ফেসবুকের গাইডলাইন অনুযায়ী সহিংসতার ঘটনায় যদি কেউ আনন্দ বা খুশি সেটা ব্যক্ত করে, তাহলে সেই পোস্ট ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নিজেরাই ডিলিট করে দেয়।

বিবিসির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মি. হুসেইন বলেছেন, “রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপরে অত্যাচারের অনেক ছবি পাচ্ছি আমি। খুবই বীভৎস সেসব ছবি। সেগুলো যদি আমরা দুনিয়ার মানুষকে না দেখাতে পারি, তা হলে আর কী দেখাব আমরা?”

তবে শুধু ফেসবুক নয়, মি. হুসেইন আরাকান নিউজ এজেন্সি নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালান। প্রায় ৬০ হাজার সাবস্ক্রাইবার আছে ওই চ্যানেলের। সেটিও হঠাৎ করেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তবে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে জানিয়েছে ওই চ্যানেলের বিরুদ্ধে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেজন্যই চ্যানেল বন্ধ করতে হয়েছে। কিন্তু সেটি আবারও খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে ইউটিউব।

রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে পালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

বিবিসি অবশ্য ওইসব ভিডিও আর ছবি, যেগুলি মি. হুসেইন পোস্ট করেছিলেন, সেগুলোর সত্যতা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করে দেখতে পারে নি।

কিন্তু শুধু মি. শাহ হুসেইন নয়, জার্মানিতে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতা নয় সেন লিন-এর ফেসবুক পোস্টও ডিলিট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তিনি জানান, তার পোস্টে কোন ছবিও ছিল না, শুধুই লেখা ছিল। তবুও সেগুলো মুছে দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রতি তিনি কিছু প্রশ্ন রেখেছিলেন, আর লিখেছিলেন একটি কবিতা।

নয় সেন লিন বলছেন, কুয়ালালামপুরে বাসরত তার এক বন্ধুর ইংরেজিতে লেখা রোহিঙ্গাদেও ওপরে সহিংসতা সংক্রান্ত কিছু সাধারণ তথ্যও মুছে দেওয়া হয়েছে। মি. লিনের ওই বন্ধুর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ৭২ ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।

মি. লিনকে ফেসবুকে কয়েক হাজার ব্যক্তি ফলো করে থাকেন। তিনি বলেন, পোস্টগুলির কারণে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাকে।

তার সন্দেহ ফেসবুক পোস্ট ডিলিট হওয়ার পেছনে মিয়ানমার সরকারের হাত থাকতে পারে। তারা হয়তো কোন একটি বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে সামাজিক মাধ্যমে এই সব পোস্ট আর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার আটকাতে চাইছে।

তবে মানবাধিকার কর্মীরাও বলছেন এইসব অভিযোগ প্রমাণ করা খুবই কঠিন।

মিয়ানমারে অবস্থানরত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক কর্মকর্তা লরা হেগ বলেছেন, “আমাদের কাছেও অভিযোগ এসেছে অনেক রোহিঙ্গা নেতাদের ফেসবুক পোস্ট নাকি ডিলিট করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে এইসব পোস্ট মুছে দেওয়া হচ্ছে, সেটা খুঁজে বার করা খুবই কঠিন। একটা সম্ভাবনা হল এইসব পোস্ট বা টুইটের বিরুদ্ধে হয়তো অনেক অভিযোগ জমা পড়ছে, সেজন্যই ডিলিট করা হচ্ছে।”

লরার ভাষায়, “এটা কিছুটা প্রচার যুদ্ধ চলছে। পর্দার পিছনে যে আসলে কী হচ্ছে, বলা কঠিন।”

(Visited 5 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here