দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে স্বপ্ন জাগানিয়া “সুন্দরবনের হাসি” প্রকল্প

0
363
র‌্যাব-৮

Sharing is caring!

ঐশ্বর্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর জীব বৈচিত্রের স্বমহিমায় বিশাল সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হাজার হাজার উপকূলবর্তী মানুষ প্রতি নিয়তই বনদস্যু/জলদস্যুদের আক্রমনের শিকার হয়ে থাকে। সুন্দরবন সহ বিস্তীর্ণ
উপকূলীয় এলাকায় বনদস্যু, জলদস্যুদের দমনের লক্ষ্যে র‌্যাব, পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বন বিভাগের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে, যার প্রধান সমন্বয়কারী “মহাপরিচালক র‌্যাব ফোর্সেস”। র‌্যাব সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যু ও বনদস্যুদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।

- Advertisement -

র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর হতে এ পর্যন্ত সফল অভিযানে ২৬ টি বাহিনীর সর্বমোট ২৭২ জন জলদস্যু/বনদস্যু গ্রেফতার হয় ও , ৪০৪টি অস্ত্র এবং ১৯,১৫৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার আইনের আওতায় নিয়ে আসে। এবং র‌্যাব-৮ অভিযানে সুন্দরবন হতে সর্বমোট ১,০০১ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৭,৬১৫ রাউন্ড গোলাবারুদ, ০৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের চামড়া, ৬৬টি হরিণের চামড়াসহ শতাধিক পরিমান জিম্মী জেলেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। ফলে সুন্দরবন কেন্দ্রিক বনদস্যু/জলদস্যু বাহিনীর অপতৎপরতা বহুলাংশে কমে এসেছে। সাধারনত ইলিশ ও শুটকি মৌসুমকে কেন্দ্র করে জলদস্যু/ডাকাতরা তাদের ডাকাতি, জেলে অপহরণ এবং অপহরণের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সে কারনে ইলিশ মাছ আহরণ ও শুটকি প্রক্রিয়াকরণ মৌসুমে সুন্দরবন এলাকায় যাতে মৎস্য আহরনকারী জেলেদের জলদস্যু কর্তৃক অপহরণ/ডাকাতির কবলে না পড়তে হয় সে লক্ষ্যে র‌্যাব সুন্দরবন এলাকায় জলদস্যু/ডাকাত দমনে বিশেষ আভিযানিক কার্যক্রম জোরদার
করেছে।

র‌্যাব-৮

আতœসমর্পনের পর জলদস্যুদের স্বাভাবিক জীবনযাপন অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কল্যান তহবিল ও র‌্যাব ফোর্সেস এর মাধ্যমে অনুদান প্রদান ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আতœসমর্পনকৃত প্রত্যেক জলদস্যুকে প্রধানমন্ত্রীর কল্যান তহবিল হতে নগদ ১ লক্ষ টাকার চেক এবং র‌্যাব ফোর্সেস এর নগদ ২০,০০০/- টাকা ও মোবাইল সেট প্রদান করা হয়েছে। জলদস্যুরা যেন স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে র‌্যাব ফোর্সের মাধ্যমে তাদের আইনি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের সাধারণ মামলা সমুহের সাধারণ ক্ষমা করে সকল ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন।

০১ নভেম্বর সুন্দরবন জলদস্যু মূক্ত হতে যাচ্ছে। উপকূলের মানুষের মনে উৎসব আমেজ। থাকবে না ভয়ংকর সাত্তার, জাকির, শরিফ, সিদ্দিক বাহিনীর নিষ্ঠুর কার্যকলাপ। মাছ ধরার মৌসুমে সবাই নিশ্চিন্তে মাছ ধরবে, পরিবার থাকবে নিশ্চিন্তে। দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাবে সামনের দিকে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে এবং ভবিষ্যতে যেন কোন জলদস্যুর সৃষ্টি না হয় সে জন্য র‌্যাব ফোর্সেস একনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টহল জোরদারসহ অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। র‌্যাব কাজ করছে জলদস্যু তৈরীর পিছনের কারিগরদের বিরুদ্ধে।

 

গত ১২ জুন ২০১৮ তারিখে র‌্যাব-৮, বরিশাল কমপ্লেক্সে র‌্যাব ফোর্সেস ডিজি জনাব বেনজির আহমেদ, বিপিএম (বার) “সুন্দরবনের হাসি” নামক প্রকল্পের উদ্ভোদন করেন এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য আত্মসমর্পনকৃত জলদস্যুদের পূনর্বাসন করা। জলদস্যুদের আরও বেশী আতœনির্ভরশীল করার জন্য ২০টি পরিবারের মাঝে সেলাই মেশিন, শিক্ষা ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান করেন। পাশাপাশি সেলাই, কম্পিউটার, ড্রাইভিং, বুটিক, ওয়েল্ডিং প্রশিক্ষণে ইচ্ছুক পরিবারদের প্রশিক্ষন কর্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করা যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুদান ও পূনর্বাসন প্রকল্পের পাশাপাশি সুন্দরবনের হাসি প্রকল্প জলদস্যুদের স্বাভাবিক জীবন মান প্রভাবিত করবে।

পরিশেষে র‌্যাব ফোর্সেস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সার্বিক দিক নির্দেশনায় উপকূলে জলদস্যু মুক্ত রাখতে সকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। শান্তির দূত হিসেবে র‌্যাব-৬ ও র‌্যাব-৮ এর কার্যক্রম ভবিষ্যতেও
অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে  র‌্যাব-৮ এর অতিরিক্ত ডিআইজি,  অধিনায়ক আতিকা ইসলাম।

(Visited 4 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here