তরুণদের পছন্দের তালিকায় কল সেন্টারের চাকরি!

0
442

Sharing is caring!

বর্তমানের তরুণদের পছন্দসই একটি পেশা হচ্ছে কল সেন্টারের চাকরি। বাংলাদেশে দিনে দিনে বাড়ছে কল সেন্টার। এখানে স্থায়ী চাকরির পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজেরও সুযোগ আছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার পাশাপাশি এই চাকরিতে যুক্ত হচ্ছেন। অন্য চাকরিতে ঢোকার ক্ষেত্রেও এই চাকরির অভিজ্ঞতা বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে কাজ করে। কল সেন্টারের চাকরি নিয়ে লিখেছেন মোছাব্বের হোসেন

- Advertisement -

তরুণদের পেশা
কল সেন্টারে কাজের সঙ্গে যুক্তদের বেশির ভাগই তরুণ। গ্রামীণফোনের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মাদ শাহেদ বলেন, এই পেশায় তরুণেরাই বেশি আগ্রহী। গ্রাহকদের সঙ্গে ফোনে আলাপের মাধ্যমে তাঁদের বিভিন্ন পণ্য, সেবার চাহিদা ও অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানা যায়। কেউ প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড নিয়ে বিপণন করলে এটি বিপণন জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ পড়ছেন মঈনুল। পাশাপাশি একটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরিও করছেন। তিনি বলেন, এতে করপোরেট সংস্কৃতি সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়।

কাজের ক্ষেত্র
কল সেন্টারের মূল কথা হচ্ছে ফোনের মাধ্যমে গ্রাহকসেবা দেওয়া। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের সভাপতি আহমাদুল হক বলেন, বিটিআরসির নিবন্ধিত কল সেন্টারের সংখ্যা ৮০টির বেশি। তবে তাঁদের সংগঠনের নিবন্ধিত কল সেন্টারের সংখ্যা ৫৬। এগুলোর মধ্যে বেশির ভাগই স্থানীয় পর্যায়ে গ্রাহকসেবা দেয়। বেশ কিছু বিদেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের সেবা দেয়। তাঁর মতে, এই খাতে দিন দিন কাজের চাহিদা বাড়ছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এই খাতে ৪০-৫০ হাজার নতুন কর্মী যুক্ত হবে।
কাজের ধরন

বর্তমানে বাংলাদেশের কল সেন্টারগুলোতে দুই ধরনের সেবা দেওয়া হয়—স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সেবা। স্থানীয় পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি এই সেবা দেয় টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলো। উন্নত দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো কল ফরওয়ার্ডের মাধ্যমে তাদের গ্রাহকদের কলটি পাঠিয়ে দেয় নির্দিষ্ট কোনো কল সেন্টারের নম্বরে। কল সেন্টারে কর্মরতদের প্রধান কাজ হচ্ছে গ্রাহকের সঠিক সেবা নিশ্চিত করা। গ্রাহকদের ফোনের মাধ্যমে সেবা দেওয়াই কল সেন্টারের প্রধান কাজ। গ্রাহকদের প্রতিটি কল এক এক ধরেনর হয়, তাই কাজটি একঘেয়ে হয় না।

যোগ্যতা
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যেকোনো বিষয়ে পড়লেই এই চাকরির জন্য আবেদন করা যায়। গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা শিক্ষানবিশ পদের জন্য স্নাতক পর্যায়ে পড়ছেন—এমন শিক্ষার্থী এবং এর ওপরের পদের জন্য স্নাতক পাস নিয়ে থাকে। এ ছাড়া তাঁকে অবশ্যই অফিসের কাজের জন্য মৌলিক কম্পিউটার জ্ঞান থাকতে হবে। শুদ্ধ ভাষায় কথা বলা ও উত্তর দেওয়ার কাজে দক্ষ হতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য চার থেকে নয় ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন শিফট আছে।

যেসব দক্ষতা জরুরি
কল সেন্টারে কাজের জন্য প্রধান দক্ষতা হচ্ছে গ্রাহকের কথা মন দিয়ে শোনা। কাজী মোহাম্মাদ শাহেদ বলেন, ‘কল সেন্টারে লোক নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত দেখি কার্যকর যোগাযোগ দক্ষতা, ইতিবাচক মানসিকতা, সহযোগিতা করার মানসিকতা এবং একসঙ্গে বিভিন্ন কাজ করার সামর্থ্য।’ আহমাদুল হক বলেন, এই কাজের যোগ্যতা হলো যোগাযোগের ভালো দক্ষতা। ঢাকায় সফট-কল নামের একটি কল সেন্টারের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা তাসমিনা ক্রোড়ী বলেন, এই পেশায় যাঁরা আগ্রহী তাঁদের ধৈর্যশীল হতে হবে। গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে হবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়া
কল সেন্টার কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের ওয়েবসাইটে ও চাকরির পোর্টালগুলোতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। গ্রামীণফোনের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা প্রথমে চাহিদা অনুযায়ী জীবনবৃত্তান্ত দেখেন। পছন্দ হলে আবেদনকারীর মৌখিক যোগাযোগ দক্ষতা পরীক্ষার জন্য কথা বলার যোগ্যতা (ভয়েস) পরীক্ষা করা হয়। এরপর সাক্ষাৎকার ও কর্মভিত্তিক পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে।

বেতন–ভাতা ও সুযোগ–সুবিধা
বিভিন্ন কল সেন্টার ঘণ্টা অনুসারে বেতন দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের মানের ওপর বেতন নির্ভর করে। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি থাকে। তবে কেউ যদি ছুটির দিনেও অফিস করেন, সে ক্ষেত্রে বাড়তি বেতন দেওয়া হয়। এই পদে থেকে ভালো দক্ষতা দেখাতে পারলে অনেক ওপরের পদে যাওয়া সম্ভব। অনেক সময়ে এসব পদের অভিজ্ঞতা বিভিন্ন চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হয়।

(Visited 9 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here