মিস্টার পার্টনার মুশফিকুর রহিম

0
191

Sharing is caring!

নিজেকে ফিরে পেলেন মুমিনুল। ক্যারিয়ারের সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরি দিয়ে পেরিয়ে গেলেন যাঁকে, সেই মুশফিকই আজ পথ দেখিয়েছেন তাঁকে

পার্টনারশিপ লাগবে পার্টনারশিপ। মাহমুদউল্লাহর হাহাকার সিলেট থেকে ঢাকাতেও প্রতিধ্বনিত হলো। ক্রিকেটে ভালো স্কোরের মেরুদণ্ডই হলো জুটি। এই জুটিই যে পাচ্ছে না বাংলাদেশ! মিরপুর টেস্ট শুরুর আগেও ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়কের আকুতিটা মিটিয়ে দিলেন তাঁরই পরম আত্মীয়। তাতে টানা ৮ ইনিংসে ২০০ পেরোতে না পারা বাংলাদেশ প্রথম দিন শেষ করল ৩০০ পেরিয়ে। অথচ বাংলাদেশ দিনটা শুরু করেছিল ২৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে!

- Advertisement -

এই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে প্রথমে ঢাল পরে তলোয়ার হয়ে উঠল চতুর্থ উইকেট জুটিটা। মুশফিক–মুমিনুলের ২৬৬ রানের এই জুটি টেস্টে বাংলাদেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ। ঢাকার মাঠে সর্বোচ্চ। এ বছর জানুয়ারিতেই তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল-মুশফিক ২৩৬ রান যোগ করেছিলেন। সেই জুটিকে রানের সংখ্যায় পেরিয়ে গেলেন তাঁরা দুজনই। আর ২ রান যোগ করতে পারলে ভেঙে দিতে পারতেন ৫ বছর আগে মুশফিক-আশরাফুলের গড়া ২৬৭ রানের জুটিটাকে।

সচেতন পাঠক হলে ঠিকই খেয়াল করেছেন, বাংলাদেশের সেরা সেরা জুটিগুলোর কথা যখনই আসছে, একটি নাম ধ্রুবতারা হয়ে আছে। মুশফিকুর রহিম। টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ৫ জুটির চারটিতেই আছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল, যাঁকে মিস্টার পারফেক্ট পার্টনার নামটাও এখন দিয়ে দেওয়া যায়। টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটিটাতেও আছেন মুশফিক। গত বছর ওয়েলিংটন টেস্টে পঞ্চম উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে করেছিলেন ৩৫৯। মুশফিকের টেস্ট অভিষেকের পর বাংলাদেশ ১০০ পেরোনো জুটি গড়েছে ৫২ বার। এর ১৮টিতেই আছে মুশফিকের নাম।

মুশফিকের সঙ্গে যখন বারবার জুটির রেকর্ডগুলো উঠে আসে, বুঝতে হবে, সঙ্গী হিসেবে মুশফিক নিশ্চয়ই দারুণ কিছু। যিনি নিজে শুধু ভালো খেলেন না, ননস্ট্রাইকিং প্রান্ত থেকেও এমন কিছু করেন, সঙ্গী ব্যাটসম্যান আস্থা পান। কথাটা আজ মুমিনুলও বললেন।

গত আট ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যর্থতা আর মুমিনুল হকের ব্যর্থতা মিলেমিশে গিয়েছিল। বছরের শুরুতে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ার পরের ৮ ইনিংস মিলিয়ে ৬৯ রান করেছেন। এর মধ্যে আছে তিনটা শূন্য। সেই মুমিনুল আজ যখন ব্যাট করতে নামলেন, বাংলাদেশ থরহরিকম্প। আর একটা উইকেট পড়লে সর্বনাশের চূড়ান্ত।

সেই চাপ সামলে নিতে যোগ্য মানুষটাকেই সঙ্গী হিসেবে পেলেন মুমিনুল। মুমিনুলকেও যেন খোলস থেকে বের করে আনলেন মুশফিক। আধা-আত্মবিশ্বাসী শটগুলোর ধুলো ঝেড়ে মুমিনুল কী এক দুর্দান্ত ইনিংসটাই না খেললেন! থামলেন ১৬১ রানে। ক্যারিয়ারের সাত সেঞ্চুরির তিনটাই ১৫০ পেরোনো!

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা মুমিনুল বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানালেন মুশফিককেও, ‘আমাকে মুশফিক ভাই খুব সাহায্য করেছেন। তিনি আমাকে ভালো গাইড করেছেন। আমি মাঠে অনুভব করেছি, কেন তিনি বাংলাদেশের সেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন। মাঠে খেলার সময় এই জিনিসটা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছে। ওনার কিছু কিছু পরামর্শ, গাইডেন্স এত ভালো ছিল, আমাকে ব্যাটিংয়ের সময় অনেক সাহায্য করেছে। ওনার সাহায্যটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমার ইনিংসে।’

টেস্ট সেঞ্চুরি সংখ্যায় মুশফিককে (৬টি) পেরিয়ে যাওয়ার দিনে মুমিনুল অভিভাবক হিসেবে মুশফিককেই পেলেন! তাঁর চেয়ে ভালো সঙ্গী আর কে হতে পারেন!

জুটি জুটির রান প্রতিপক্ষ ভেন্যু সাল
মুশফিক-সাকিব ৩৫৯ (৫ম) নিউজিল্যান্ড ওয়েলিংটন ২০১৭
ইমরুল-তামিম ৩১২ (১ম) পাকিস্তান খুলনা ২০১৫
মুশফিক-আশরাফুল ২৬৭ (৫ম) শ্রীলঙ্কা গল ২০১৩
মুশফিক-মুমিনুল ২৬৬ (৪র্থ) জিম্বাবুয়ে ঢাকা ২০১৮
মুশফিক-মুমিনুল ২৩৬ (৩য়) শ্রীলঙ্কা চট্টগ্রাম ২০১৮
(Visited 1 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here