চবি ছাত্র আলাউল হত্যায় মামলা সাবেক প্রেমিকা ও স্বামীর দিকেই সন্দেহের তীর

0
351

Sharing is caring!

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের (চবি) বাংলা বিভাগের ছাত্র মোহাম্মদ আলাউদ্দিন চৌধুরী আলাউল হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আলাউল এর পিতা মোহাম্মদ শাহ আলম বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

- Advertisement -

চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ থানার শহীদ নগর এলাকায় ২২ মার্চ রাতে আলাউলের লাশ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার তার পরিবারের সদস্যরা আলাউলের লাশ সনাক্ত করেন। এর পর মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বয়োজিদ থানার ওসি মো. মহসীন জানান, সম্ভাব্য খুনিদের আমরা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করতে পেরেছি। সে মতে তদন্ত এগুচ্ছে। আশা করি শীঘ্রই খুনিরা ধরা পড়বে।

তবে ঘটনার পর দুদিন পেরিয়ে গেলেও হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটন কিংবা খুনিদেন আটক করা সম্ভব হয়নি।

আলাউলের চবির বন্ধুদের ধারণা প্রেমঘটিত ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হতে পারে। প্রেমের এ সূত্র ধরে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে, বায়েজিদ থানা পুলিশ।

আলাউলের এলাকার বন্ধু মোহাম্মদ জাফর বলেন, ‘বুধবার বিকেলের দিকে আমি যখন বাসা থেকে বের হই তখন তার সঙ্গে দেখা হয়। সে আমাকে জিজ্ঞেস করে, কোথায় যাচ্ছি। আমি বড়দিঘীর পাড় যাবো বলে জানাই। তখন সে বলে- আমি অক্সিজেন যাব, আমার সাথে চল। এরপর আমরা মদনহাট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩নং বাস তরীতে করে রওনা দিই। যাওয়ার পথে সে আমাকে এক মেয়ের ছবি দেখিয়ে বলে, সে ওর সঙ্গে দেখা করতে যাবে। এরপর গাড়ি বড়দিঘীর পাড়ে এলে আমি নেমে যাই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার (আলাউল) আর এক বন্ধু জানান, গৃহশিক্ষক থাকাকালে প্রতিবেশী ইয়াছমিন আকতার রুম্পা নামে এক মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়ায় আলাউল। তার সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অবস্থায়ই কয়েক বছর আগে হাটহাজারীর বড়দিঘীর পাড় এলাকার এক ছেলের সাথে রুম্পার বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পরও তাদের সম্পর্ক ছিল এবং রুম্পা বাপের বাড়িতে আসলে আলাউলের সাথে দেখা করতো। বিয়ের পরও তাদের সম্পর্ক থাকার বিষয়টি রুম্পার স্বামী জেনে যায়। এতে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

আলাউলের ওই বন্ধু আরও জানান, এর কিছুদিন পর রাউজানের এক ছেলের সঙ্গে রুম্পার পুনরায় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে রুম্পা এবং তার স্বামী বায়েজিদ থানার অক্সিজেন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। পাঁচ-ছয় মাস আগে একদিন হঠাৎ আলাউলকে মোবাইলে ঝগড়া করতে দেখা যায়। ঝগড়ার বিষয়ে জানতে চাইল আলাউল বলে, রুম্পার দ্বিতীয় স্বামী তাকে নাকি হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এরপর বিষয়টা মিটমাট করে দিলে সে আর রুম্পার সাথে যোগাযোগ রাখবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়।

তাই বন্ধুমহলের ধারণা এ পরকীয়া প্রেমের বিরোধের কারণেই আলাউল খুন হতে পারেন। তাদের ধারণা ঘটনার দিন হয়তো রুম্পা ও তার দ্বিতীয় স্বামী কৌসলে নতুন বাসা দেখার কথা বলে আলাউলকে ঢেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তাই রুম্পা ও তার দ্বিতীয় স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যার রহস্য উদঘাটন হতে পারে।

প্রসঙ্গত, ২২ মার্চ রাত দুইটার দিকে বায়েজিদ থানার পশ্চিম শহীদনগর এলাকায় একটি চারতলা ভাড়া বাসার টয়লেট থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে বায়েজিদ থানার পুলিশ। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানায়, প্রাথমিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আলাউল হাটহাজারীর মদনহাট বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হেলাল চৌধুরী পাড়ার মোহাম্মদ শাহআলমের বড় সন্তান। রাত সাড়ে ১০টায় তার দাফন শেষে পারিবারিক কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।

 

(Visited 2 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here