চলতি মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এছাড়া ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দেখা দিতে পারে আকস্মিক বন্যা। এছাড়া মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ও তীব্র কালবৈশাখীরও পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস দিতে আবহাওয়া অধিদফতরের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি এ সব পূর্বাভাস দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরে মঙ্গলবার (২ মে) কমিটির নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধিদফতরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ এতে সভাপতিত্ব করেন।
সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, মে মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে।
চলতি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩ দিন বজ্রসহ মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী ও দেশের অন্যত্র ৩ থেকে ৪ দিন হালকা বা মাঝারি কালবৈশাখী/বজ্রঝড় হতে পারে বলেও জানান তিনি।
পরিচালক আরও জানান, মে মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১ থেকে ২টি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা) এবং অন্যত্র ২ থেকে ৩ টি মৃদু (তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
মে মাসে দেশের নদ-নদীর পানি সমতল স্বাভাবিক থাকবে। তবে অতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি স্থানে আকষ্মিক বন্যা হওয়ার আশঙ্কার কথাও জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসের আবহাওয়া পর্যালোচনা করে কমিটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ওই সময়ে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ১০৬ দমমিক ২ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। পশ্চিমা লঘুচাপের সাথে পূবালী বায়ু প্রবাহের সংযোগ ঘটায় ১ থেকে ৫ এপ্রিল দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এবং ১৯ থেকে ২৪ এপ্রিল দেশের অনেক স্থানে কালবৈশাখী ঝড় বা বজ্রঝড়সহ বৃষ্টি হয়। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়।
এপ্রিল মাসে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলেও জানায় আবহাওয়া অধিদফতর।
মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে, যা উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আগামী সপ্তাহ থেকে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে বলেও জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবেচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ঢাকা ও টাঙ্গাইলে। এ দুটি স্থানে ৬২ মিলিমিটার করে বৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে, সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

















