নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস বাংলাদেশের

0
149

Sharing is caring!

মূল কাজটা করে দিয়েছেন বোলাররাই। নিউজিল্যান্ডকে তাদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন রানে অলআউট করে বাংলাদেশের জয়ের রাস্তা পরিষ্কার করে দেন তারা। লক্ষ্য ছিল মাত্র ৬১ রানের।

- Advertisement -

মিরপুরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেই লক্ষ্য পাড়ি দিতে গিয়ে শুরুতে কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল টাইগাররা। ৭ রানের মধ্যে হারিয়ে বসেছিল ২ উইকেট। শেষ পর্যন্ত আর মিরাকল ঘটিয়ে কিছু করতে পারেনি কিউইরা।

৫ ওভার হাতে রেখে ৭ উইকেটের সহজ জয়ই পেয়েছে বাংলাদেশ। যে জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

এটিই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডবধ। এর আগে দশ ম্যাচের প্রতিটিতেই হার দেখতে হয়েছিল টাইগারদের।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যর্থতার পরিচয় দেন দুই ওপেনার নাইম শেখ আর লিটন দাস। দুজনই ফেরেন সমান ১ রান করে। অভিষিক্ত ম্যাকঞ্চিকে ড্রাইভ করতে গিয়ে শর্ট কভারে ক্যাচ হন নাইম। অ্যাজাজ প্যাটেলের করা পরের ওভারে লিটন পড়েন স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে।

৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। তবে এমন পিচে যেভাবে দেখেশুনে খেলা দরকার, অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান সেভাবেই খেলেছেন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার শেষ পর্যন্ত দলীয় ৩৭ রানের মাথায় সাজঘরের পথ ধরেন। ৩৩ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৫ রান করে তিনি হন রবিন্দ্রর শিকার।

তবে বাকি পথটা সহজেই পাড়ি দিয়েছেন মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৩১ বলে ২৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তারা। মাহমুদউল্লাহ ২২ বলে ১৪ আর মুশফিক ২৬ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে মোস্তাফিজ-সাকিব-নাসুমদের তোপে ১৬.৫ ওভারেই নিউজিল্যান্ড অলআউট হয়ে যায় ৬০ রানে। যেটি যৌথভাবে তাদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর।

এর আগে এই ফরমেটে কিউইদের সবচেয়ে কমে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটিও ছিল ৬০ রানের। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচে বাংলাদেশেরই মাঠে (চট্টগ্রামে) তাদের ১৫.৩ ওভারে গুটিয়ে দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা।

স্পিনে নিউজিল্যান্ডের দুর্বলতাটা চিরকালীন। সেই সুযোগটা শতভাগ কাজে লাগালেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইনিংসের প্রথম ৫ ওভার করালেন শুধু স্পিনারদের দিয়ে।

বুদ্ধিটা কাজেও লাগলো বেশ। শুরু থেকেই স্বাগতিক স্পিনারদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে পড়ে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামা কিউইরা। ৯ রানের মধ্যে হারিয়ে বসে শীর্ষ ৪ ব্যাটসম্যানকে। মোটে তখন ৪ ওভার পেরিয়েছে ইনিংসের।

বরাবরের মতো অফস্পিনার শেখ মেহেদি হাসানকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছেন মাহমুদউল্লাহ। প্রথম ওভারটিই তুলে দেন তার হাতে। মেহেদিও ব্রেক থ্রু এনে দিতে ভুল করেননি। ইনিংসের তৃতীয় বলে কিউই অভিষিক্ত রাচিন রবিন্দ্রকে (০) ফিরতি ক্যাচ বানান তিনি।

 

পরের ওভারটি করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে আলো ছড়ানো নাসুম আহমেদ। ওই ওভারে উইকেট না গেলেও বেশ অস্বস্তিতে দেখা যায় কিউইদের।

তৃতীয় ওভারে অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আসেন মাহমুদউল্লাহ। নিজের পঞ্চম বলে উইল ইয়ংকে (৫) বোল্ড করেন সাকিব। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল উইকেটে টেনে এনে দলের বিপদ বাড়ান ইয়ং।

চতুর্থ ওভারে নাসুমের জোড়া আঘাত। চার বলের ব্যবধানে ফিরিয়ে দেন দুই কিউই ব্যাটসম্যানকে। ওভারের তৃতীয় বলে বাঁহাতি স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে নাইম শেখের সহজ ক্যাচ হন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম (১), দুই বল পর বোল্ড টম ব্লান্ডেল (২)।

কঠিন সে বিপর্যয় থেকে কিউইদের টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক টম ল্যাথাম। হেনরি নিকোলসকে নিয়ে ৪০ বলে ৩৪ রানের একটি জুটিও গড়েন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারেননি।

ইনিংসের একাদশতম ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে পুল করতে গিয়ে টাইমিং মিস করে ফাইন লেগে নাসুমের ক্যাচ হন ল্যাথাম (২৫ বলে ১৮)। এরপরই ভেঙে যায় সব প্রতিরোধ।

কোল ম্যাকঞ্চি (০) আর হেনরি নিকোলস (২৪ বলে ১৮) ফেরেন পরের টানা দুই ওভারে। ম্যাকঞ্চিকে ফেরান সাকিব, নিকোলসকে সাইফউদ্দিন। এরপর লেজটা উপড়ে দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, শেষ ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনিই। কাটার মাস্টারের মোট খরচ ১৩ রান।

সাকিব ৪ ওভারে ১০, নাসুম ২ ওভারে ৫ আর সাইফউদ্দিন ২ ওভারে ৭ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। বাকি উইকেট শেখ মেহেদি হাসানের। ৪ ওভারে তিনি খরচ করেন ১৫ রান।

(Visited 1 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here