রবিবার , ৩০ এপ্রিল ২০১৭ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

এক অসহায় বাবার সকরুণ আহাজারি সাড়ে ৪ লাখ টাকায়ও মেলেনি দফতরির চাকরি

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
এপ্রিল ৩০, ২০১৭ ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি :

বাছাই পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পরও ঘুষ দিয়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। সঙ্গে বাগদা চিংড়ি, কৈ, ভেটকি মাছ, আঙুর, আপেল, কলা ও মিষ্টিও ছিল। তারপরও চাকরি হয়নি সাতক্ষীরার রাজ কুমারের। অথচ বাছাই পরীক্ষায় ৬ নম্বর হয়েও ৬ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ায় তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অসীমের চাকরি হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৯৬নং ব্যাংদহা প্রাইমারি স্কুলে দফতরি কাম নৈশপ্রহরী নিয়োগে এভাবেই সাতক্ষীরা সদর-২ আসনের সংসদ মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবিসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে সরাসরি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুললেন সদর উপজেলার ব্যাংদহা গ্রামের মৃত রাধাপদ ঢালীর ছেলে নিমাই চন্দ্র ঢালী। তিনি বিষয়টি দুদকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন।

শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এসে সাংবাদিকদের সামনে অঝোরে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন একটি রাইচ মিলের কর্মচারি। সারা জীবনের অর্জিত অর্থ ঘুষ দিয়েও তিনি ছেলের চাকরিটা করাতে পারেননি। সেই শোকে তিনি নিজেই প্যারালাইজড হয়ে পঙ্গু জীবনযাপন করছেন। সাংবাদিকদের কাছে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আপনারা আমাকে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেন। আমাদের মত মানুষের জন্য এদেশ যেন হারাম হয়ে গেছে।

নিমাই চন্দ্র ঢালী বলেন, ২০১৪ সালে তার ছেলে রাজকুমার ঢালী সদর উপজেলার ব্যাংদহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী পদে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে। চাকরির আশায় তিনি নিয়োগ পরীক্ষার আগে ফিংড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খায়ের সরদারকে ২০ হাজার টাকা দেন। পরে খায়ের সরদারের কথামত ব্যাংদহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশরাফুজ্জামান ও সহ-সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাসকে ২ লাখ টাকা দেন। পরে খায়ের সরদারই তাকে ফোন করে জানান, ৫০ হাজার টাকা সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে দিতে হবে। সে কথা মোতাবেক, গাছ বিক্রি করে তিনি ৪০ হাজার টাকা জোগাড় করে সাতক্ষীরা শহরে আসেন। শহরের অশোক ঘোষের ভিসা অফিসে বসে তিনি সংসদ সদস্যকে দেওয়ার জন্য স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক মহসীন হোসেন বাবলুর কাছে ৪০ হাজার টাকা প্রদান করেন। টাকাটি গুনে মহসীন হোসেন বাবলু পকেটে রাখেন।

নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হওয়ার পাশাপাশি এতগুলো টাকা দিয়েও ছেলের চাকরি না হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। ছেলের চাকরির আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন নিমাই চন্দ্র ঢালী। পরবর্তীতে তার দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতারকচক্র আরো টাকা হাতানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন ফাঁদ পাততে থাকে। সংসদ সদস্যকে ম্যানেজ করার জন্য মহসিন হোসেন বাবলুকে দুটি গরু বিক্রি করে আরো ৫০ হাজার টাকা দিতে হয়। তাতেও চাকরি হয়নি। বাড়তে থাকে ঘুষের অংক। দহকুলার যুবলীগের পাতি নেতা শফিও বাদ যাননি ঘুষের টাকা নিতে। তাকেও দিতে হয় ১৫ হাজার টাকা। এরপর তিনি সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির মুখোমুখি হন। চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট অফিসে বসে সংসদ সদস্য নিজেই ৫০ হাজার টাকা গুনে নেন।

নিমাই চন্দ্র ঢালী বলেন, রেড ক্রিসেন্ট অফিসে বসে সংসদ সদস্য নিজে টাকা নেওয়ার পরে তিনি চাকরির বিষয়ে কিছুটা নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন। কিন্তু নিয়োগপত্রের পরিবর্তে তার হাতে জোটে বাছাই কমিটি কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ফলাফলের কাগজপত্র।

এতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হলে সাংসদ তাকে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দিয়ে বলেন, চাকরি পেতে তাকে আরো খরচ করতে হবে। পরবর্তীতে ছেলের চাকরি না হওয়ায় তার হতাশা আরো বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে চাকরি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে সংসদ সদস্যের পিএস মকছুমুল হাকিম ২০ হাজার টাকা, সংসদ সদস্যের ছোট ভাই মইনুল ২০ হাজার টাকা এবং খায়ের সরদারের ছেলে লাল্টু ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।

নিমাই ঢালী আক্ষেপ করে বলেন, শুধু টাকাই নয়, প্রতারকরা চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে বিভিন্ন সময়ে বাগদা চিংড়ি, কৈ মাছ, ভেটকি মাছ, আপেল, কলাসহ বিভিন্ন ফল-ফলাদি নিয়ে তাকে সর্বস্বান্ত করেছে। সাড়ে চার লাখ টাকা ও এতকিছু দেওয়ার পরেও তার ছেলের চাকরি হয়নি। চাকরি পেয়েছে নিয়োগ পরীক্ষায় ৬ষ্ঠ স্থান অধিকারী অসীম কুমার দাশ। এমপির বন্ধু পরিচয়দানকারি তৈহিদুর রহমান ডাবলু ও সংসদ সদস্যের ছেলে মীর তানজির আহমেদ ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে অসীমকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন।

অশ্রুশিক্ত কণ্ঠে নিমাই ঢালী বলেন, ছেলের চাকরি না হওয়ায় তিনি খায়ের সরদারের বাড়িতে যান টাকা ফেরত চাইতে। তবে টাকা ফেরত পাওয়ার পরিবর্তে তিনি চরমভাবে লাঞ্ছিত হন। এই শোকে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন তিনি। এতে প্যারালাইজড হয়ে বর্তমানে পঙ্গু জীবন-যাপন করছেন। ফলে তার চাল-কলের চাকরিটাও চলে যাওয়ায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন তিনি।

টাকা ফেরত পেয়েছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সংসদ সদস্য তার বাড়ির দোতলা থেকে একটি ব্যাগে দড়ি বেঁধে এক লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। ব্যাংদহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি দেবাশীষ বিশ্বাস তাকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন। আর উপজেলা শিক্ষা অফিসার লাবণ্য সরকার তাকে বিকাশ করে ফেরত দিয়েছেন ২৫ হাজার টাকা। পরিশেষে তিনি সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিসহ দালাল ও প্রতারকদের বিচারের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল খায়ের সরদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল। কিছু টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। চাকরিটা না হওয়া দুঃখজনক।

তবে সংসদ সদস্যের পিএস মকছুমুল হাকিম নিতাই ঢালীর নিকট থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তবে, দেশের বাইরে অবস্থান করায় সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

 

(Visited ১৩ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - জাতীয়

আপনার জন্য নির্বাচিত

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মন্ত্রিসভায় শোক ও নিন্দা প্রস্তাব

যে কারণে কাতারের পাশে তুরস্ক

এরশাদকে নিয়ে মন্তব্যের জেরে সংসদে হট্টগোল, স্পিকারের রুলিং

বেতাগীতে আত্মকর্মসংস্থান ও জীবনমান উন্নয়নে বিলে পোনা মাছ অবমুক্ত

ভোলার লালমোহনে অভিযানে নির্বাচনে হামলা ও সহিংসতার পরিকল্পনাকারী ০১ দুর্বৃত্ত গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৮

ফুটপাতে সন্তান প্রসব : মিলল বাবার খোঁজ, পুরস্কৃত সেই এসআই

বাংলাদেশের মিশন শুরু কাল : প্রতিপক্ষ ভারত

বাংলাভিশনের ক্যামেরাপার্সনের উপর হামলায় বরিশাল নিউজ এডিটরস্ কাউন্সিলের নিন্দা

জেলা প্রশাসক সম্মেলনের উদ্দেশ্যে ঢাকা যাচ্ছেন বরিশাল জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান

বরিশালে আনসার সদস্য সুমন নিজ অর্থায়নে শীতার্তদের মাঝে ২০০ কম্বল বিতরণ করলেন