প্রয়োজনে উ. কোরিয়াকে ধ্বংস করে দেব-জাতিসংঘে প্রথম ভাষণে ট্রাম্প

0
291

Sharing is caring!

‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রের’ বলয় থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের গতকাল মঙ্গলবার দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণেও ‘দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রের’ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়। আর ট্রাম্পের দৃষ্টিতে এমন দুটি রাষ্ট্র হচ্ছে, উত্তর কোরিয়া ও ইরান। নিউ ইয়র্কে সাধারণ পরিষদের দেওয়া অভিষেক ভাষণে ট্রাম্প হুঁশিয়ার করে বলেন, তাঁর দেশ ও বন্ধুদের রক্ষায় প্রয়োজন হলে উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংস করে দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

- Advertisement -

এ সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে নিয়ে কৌতুক করে ট্রাম্প বলেন, ‘রকেটম্যান আত্মঘাতী মিশনে নেমেছেন। ’ জাতিসংঘের নীতি লঙ্ঘন করে উত্তর কোরিয়া পরমাণু বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, তিনি (উন) নিজ দেশের জনগণের কল্যাণ চান না।

এই ভাষণে ইরানের ক্ষমতাসীন প্রশাসনেরও তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি করেছে তা নিয়ে তিনি বিব্রত। তেহরানের প্রশাসনকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত স্বৈরাচার’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে রেখেছে তারা। তেল বিক্রির অর্থ দিয়ে নিজ জনগণের কল্যাণ না করে তা দিয়ে হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের সন্ত্রাসীদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

ট্রাম্প আইএস প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, গত আট মাসে এই জঙ্গি গোষ্ঠি অনেক খানি পিছিয়ে পড়েছে।

যা গত কয়েক বছরে হয়নি। এছাড়াও ট্রাম্পের ভাষণে ভেনিজুয়েলা, কিউবা, আফগানিস্তান, সুদান, সিরিয়ার শরনার্থী প্রসঙ্গ উঠে আসে। প্রায় ৪০ মিনিটের ভাষণের একটা বড় অংশ জুড়ে ছিল তাঁর ‘সব প্রথমে আমেরিকা’ নীতির জিকির।

কোরিয়া সংকট মারাত্মকভাবে ঘনিয়ে ওঠার শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, তারা কূটনৈতিক সমাধান চায়। কিন্তু প্রয়োজনে সামরিক পদক্ষেপ নিতে তারা পিছপা হবে না। গত রবিবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়া নিজেদের ‘বেপরোয়া’ পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ না করলে ‘ধ্বংস’ হয়ে যাবে।

ট্রাম্পের জাতিসংঘে ভাষণের আগের দিন সোমবার তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস সেনা সদর দপ্তর পেন্টাগনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের ও আমাদের মিত্রদের কাছে অনেক উপায় আছে। মিত্রদের প্রতিরক্ষায় এবং আমাদের নিজেদের স্বার্থে আমরা সেসব উপায় অবলম্বন করব। ’ এসব উপায় নিয়ে ম্যাটিস বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, বিভিন্ন রকম সামরিক অভিযান নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা হয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জেরে দক্ষিণ কোরিয়া যেন কোনো মারাত্মক ঝুঁকিতে না পড়ে, সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাটিস হ্যাঁ সূচক জবাব দেন। এখানে বলা দরকার, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিবেশী দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (থাড) স্থাপন করেছে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত সামরিক মহড়ায় অংশ নেয়।

এ মাসে দুবার পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে পিয়ংইয়ং এবং দুটোই হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা ছিল বলে দাবি করেছে তারা। অব্যাহত আছে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিও। পিয়ংইয়ংয়ের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র-জাপানের প্রতি বিভিন্ন পক্ষের আহ্বান থাকলেও ম্যাটিস মনে করেন এর কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ওইসব ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি। সেই হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের অধীন গুয়ামের প্রতি হোক বা নিশ্চিতভাবে জাপান, জাপানের অধীন অঞ্চলে হোক, তাতে আমাদের পক্ষ থেকে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। ’ সূত্র: বিবিসি, এএফপি, দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

(Visited 9 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here