বিয়ের আশায় ইসলাম গ্রহণ করে বিপাকে স্বপ্না

0
477

Sharing is caring!

সিরাজগঞ্জ সরকারি ইসলামিয়া কলেজের ছাত্রী কুমারী গোলাপী রানী দাস এখন মোছা. রেখা খাতুন ওরফে স্বপ্না বিয়ের আশায় ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করে বিপাকে পড়েছেন।

- Advertisement -

হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ছেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ঘর-সংসার করার পর স্বপ্নাকে ফেলে যায় তার প্রেমিক। ফলে হতাশা আর ক্ষোভ তার বুকে দানা বাঁধছে। এ নিয়ে অন্ধকার দেখছেন স্বপ্না।

গত শুক্রবার সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের ফুলকোচা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আগামী শুক্রবার এ বিষয়ে শালিস বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

এদিকে, রেখা খাতুন ওরফে স্বপ্না বিয়ের দাবিতে গত ১১ দিন ধরে সদর উপজেলার ছোনগাছা বাজারে বাগবাটি ইউপি সদস্য আব্দুল কাদেরের বাড়িতে বিয়ের আশায় দিন গুনছে।

স্বপ্না তার প্রেমিককে পেতে ১১ দিন হলো ইউপি সদস্যের বাড়িতে ন্যায় বিচারের আশায় রয়েছেন। নিয়তি তাকে কোন পথে ঠেলে দেবে তা কেউ বলতে পারছে না।

তবে এ বিষয়ে স্বপ্না একটু আশার আলো দেখলেও সামাজিক বিচারে কতটুকু সফলতা বয়ে আনবে তা নির্ভর করছে দুইজন ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর। বিষয়টি নিয়ে চলছে এলাকার মানুষের মাঝে নানা জল্পনা কল্পনা আর ক্ষোভ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলেজছাত্রী স্বপ্না আভিসিনা হসপিটালে নার্সের চাকরির পাশাপাশি পড়াশুনা করছেন। এরই মধ্যে রায়গঞ্জ থানার পাঙ্গাসী ইউনিয়নের বেগনাই গ্রামের ডা. জয়নাল আবেদীনের ছেলে প্রতারক মাহবুব আলম নামে এক বিবাহিত যুবকের খপ্পরে পড়েন স্বপ্না।

মাহবুব স্বপ্নাকে চোখে ধুলা দিয়ে অবিবাহিত বলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পরে তাদের মধ্যে অবৈধ মেলামেশা শুরু হয়। এমনকি দুইজনে বাসা ভাড়া করে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করতে শুরু করেন।

বিষয়টি মাহবুব আলমের পরিবার ও তার স্ত্রী জানতে পারলে তাদের মধ্যে চলে বনিবনা। এমনকি তার বিবাহিত স্ত্রী রাগ আর ক্ষোভে বাপের বাড়ি চলে যায়।

অপরদিকে স্বপ্নার পরিবার তাকে ভারতে তার নিকট আত্মীয়ের কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু প্রতারক মাহবুব আলম স্বপ্নাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মুঠোফোনে স্বপ্নাকে ভারত থেকে নিয়ে আসেন। স্বপ্না সিরাজগঞ্জ এলে তাকে বিয়ের কথা বলে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায়।

গত ২১ জুলাই শুক্রবার দুইজনে ফুলকোচায় স্বপ্নার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এলে এলাকাবাসী তাদের ধরে ফেলে। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদেরের বাড়িতে রেখে দেয় এবং বিয়ের পরিকল্পনা করে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাইরে থাকায় দুইজনের বিয়ের কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। প্রতারক মাহবুব আলম শনিবার গভীর রাতে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে কলেজছাত্রী স্বপ্না বলেন, আমি মাহবুব আলমকে নিয়ে মন্দিরে যাই এবং আমার ধর্ম অবলম্বনে আমাকে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। তখন থেকে আমরা দুইজন মেলামেশা শুরু করি। পরে সিরাজগঞ্জ এলে আমাকে বিয়ের কথা বলে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে আদালতের মাধ্যমে এফিডেভিট করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় মাহবুব।

এ বিষয়ে স্বপ্নার বাবা বৈদ্যনাথ জানান, চেয়ারম্যান যে রায় দেবেন সেটা মেনে নেব। স্বপ্নাকে পুনরায় আমার ধর্মে আনতে হলে প্রথমে আমার সহজাতিকে ম্যানেজ করতে হবে। তারপর অনেক খড়িকাঠি পোড়াতে হবে। ঠাকুর আনতে হবে। এতে অনেক টাকা ব্যয় হবে।

এদিকে, স্বপ্না গরীব হওয়ায় তার বিচার কোন পথে প্রবাহিত হবে সে নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে। সেই সঙ্গে সবার মনে একটাই প্রশ্ন স্বপ্না কী আশার আলো থেকে বঞ্চিত হবে? সঠিক বিচার পাবে তো স্বপ্না।

তবে পাঙ্গাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম এ ব্যাপারে কোনো আইনি পদক্ষেপ না নিয়ে চূড়ান্ত বিচারের আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে বাগবাটি ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আগামী শুক্রবার পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদে শালিসি বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্বপ্না ইউপি সদস্য আব্দুল কাদেরের বাড়িতে ১১ দিন ধরে অপেক্ষা করছে ন্যায় বিচারের আশায়।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের বলেন, এলাকার লোকজন মেয়েটাকে আমার বাড়িতে স্থান করে দেয়ায় আমি সমস্যায় পড়েছি। আমি স্বপ্নার সুন্দর ও সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি বিচারকদের কাছে। বিষয়টি অবগত করার জন্য আব্দুল কাদের সদর থানায় একটি অভিযোগ করেছে। তবে অভিযোগ আমলে নেয়া হয়নি। সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

(Visited 38 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here