বৃহস্পতিবার , ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

ঝালকাঠিতে মুক্তিযোদ্ধার জমি দখল করে নিল ভূমি দস্যুরা।।

প্রতিবেদক
alltimeBDnews24
ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৭ ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক.

ঝালকাঠি.

ঝালকাঠিতে মুক্তিযোদ্ধার জমি অবৈধভাবে দখল নিলো কারা? বিভিন্ন পত্রিকায় উপরোক্ত শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হবার প্রেক্ষিতে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক আজ আবার সরেজমিনে দেখতে গেলে দেখা যায়, অবৈধ দখলকারীগণ তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে। সাংবাদিক পরিচয় পেলে মূল হোতারা সটকে পড়েন। ফোনে যোগাযোগের চেস্টা করা হলে ব্যাস্ত আছি বলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, যেহেতু জমির মালিক এখানে থাকেন না, তাই তাদের এখানে দাবি আছে। কিসের ভিত্তিতে দাবী, জানতে চাইলে জানান, এগুলা আপনারা বুঝবেন না। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এই গোষ্ঠী শুধু এই পরিবারের জমিই দখল করেনি, তাদের অপর পাশের জমি যার মালিকের নাম, শাল-আলম, তার জমির কিয়দংশ তারা দখলে নিয়েছে এবং শাহআলম সাহেবের বাউন্ডারী দেয়ালের ইট খুলে খুলে নিয়ে তাদের পাকা স্থাপনার কাজে লাগাচ্ছে। এই নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরীও করা হয়।

জানা যায় ঝালকাঠী জেলা সদরের চাঁদকাঠী মৌজার ৭০৪ দাগের সম্পত্তি, যা পূবালী সড়কে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এবং এটা ডিসির ঘাট বলেই পরিচিত এই জমির মালিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সামছুল আলম জাহাঙ্গীর মুন্সীর পরিবার। তৎকালীন তফসিল সম্পত্তি ১/ জিলা বরিশাল, মোকাম সাব রেজিস্টার ঝালকাঠি ৬ নং তৌজির মালিক বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে e-o (R) ঝালকাঠি থানাধীন জে,এল ১৩১নং চাঁদকাঠী মৌজায় S.A ৪৮৬ নং খতিয়ানে বার্ষিক ১.৮১ পয়সা খাজনা বকেয়ায় ষোলআনির মালিক যামিনী চক্রবর্তী, পিতা দীনবন্ধু চক্রবর্তী, মোকাম :ঝালকাঠি সার্টিফিকেট আদালত মাধ্যমে ১৯৬০-৬১ সালের ৬৩৭ জে:নং মোকাদ্দমার P.D.R Act এর ৪৬ ধারার বিধান মতে নিলাম সম্পত্তি জারি হওয়ায় ২৬/১০/৭০ সালে প্রকাশ্য নিলাম হয় এবং এই নিলাম কিনে নেন আব্দুল মালেক তালুকদার, পিতা: সফিজউদ্দিন তালুকদার। এরপর ৭ জুন ১৯৭৩ সালে সাবকবলা দলিল মারফত ক্রয়সূত্রে মালিক মুক্তিযোদ্ধা সামছুল আলম জাহাঙ্গীর মুন্সী, পিতা: আবদুস সালাম মুন্সী এবং হামিদা আলম , স্বামী সামছুল আলম জাহাঙ্গীর মুন্সী। মোট সম্পত্তি ৪১ শতাংশ। এই সম্পত্তি ১৯৭২ সালের ৮ নং আদেশ মতে প্রেসিডেন্ট এর ঘোষিত মতে কোন পরিত্যক্ত বা অর্পিত সম্পত্তি নয়। দলিল সম্পাদিত হয় ০৭/০৬/১৯৭৩ তারিখে ঝালকাঠি সাব রেজিস্টার অফিসে।

পরবর্তী সময়ে বর্তমান দখলদার বাহিনী ( উত্তম মালো এবং দুর্বো নাথ মালো গং) মহামান্য আদালতে যথাক্রমে সিভিলকোর্ট, জজকোর্ট এবং হাইকোর্টে মামলা করে এই মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারবর্গকে হয়রানি করে এবং সকল আদালতেই এই দখলদার বাহিনী পরাজিত হন। যার সকল প্রমাণাদি ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবার প্রতিবেদককে প্রদর্শণ করতে সমর্থ হন। অপর দিকে দখলদার বাহিনী কোন রূপ প্রমাণাদি প্রদর্শন করতে সক্ষম হয় নি। আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবা “সামছুল আলম জাহাঙ্গীর মুন্সীর” বৈধ সম্পত্তি ( ঝালকাঠী জেলা সদরে ১০ শতাংশ) দখল করে নিয়েছে হিন্দু প্রতিবেশী ( দুর্বো নাথ মালো গং এবং উত্তম মালো) । আপনাদের মন্তব্য জানতে চাই, আমাদের কি করা উচিৎ?

১৯৭১ সালে আমাদের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে নয় নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর এম.এ.জলিল এবং সাবসেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমরের নেতৃত্বে ঝালকাঠী থেকে অংশ নিয়েছিলেন সামছুল আলম জাহাঙ্গীর মুন্সী। ২০০২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারী তাঁর মৃত্যুর পর ঝালকাঠী এল জি ই ডি ভবন সংলগ্ন কৃষ্ণকাঠী গ্রামের উপর দিয়ে যাওয়া আট কিলোমিটার রাস্তার নামকরণ করা হয় ” বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর মুন্সী সড়ক”। মৃত্যুকালে তিনি ঝালকাঠী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচীব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তিনি চিরশায়িত হন কৃষ্ণকাঠী গ্রামে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সড়কটির নামফলকের জরাজীর্ণ অবস্থা; ফলকটির গায়ে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নামের কোন অংশই বোঝা যাচ্ছে না। বিজয়ের এই মাসে মুক্তিযোদ্ধার স্মৃতিফলকের অবহেলিত জীর্ণ দশা হৃদয়কে প্রচন্ড বেদনায় ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে।

আরো খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সংলগ্ন ও গুরুধাম পোল সংলগ্ন তাঁর বৈধ সম্পত্তির দশ শতাংশের মধ্যে সাত শতাংশ অবৈধভাবে অপদখল করে রেখেছে উত্তম মালো এবং দুর্বো নাথ মালো গং। এই নিকট প্রতিবেশীরা মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর মুন্সীর বৈধ সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে চলেছে একটার পর একটা।

হায়রে সোনার বাংলাদেশ!! বিদেশী দখলদারদের কবল থেকে এদেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে পারলেও দেশী-প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের কবল থেকে ছিনিয়ে আনা যাচ্ছে না মুক্তিযোদ্ধার বৈধ সম্পত্তি। নি:স্বার্থ-নির্লোভ মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবার যে আজ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়েরই অংশ।

প্রশ্ন রইলো সোনার বাংলার সচেতন সোনার মানুষদের কাছে, জাতির বিবেক কি আজও জাগবে না?

(Visited ১০ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - জাতীয়