শনিবার , ১৭ নভেম্বর ২০১৮ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. Featured
  2. অন্যান্য খেলার সংবাদ
  3. অন্যান্য ধর্ম
  4. অপরাদ
  5. অর্থনীতি
  6. অলটাইম নিউজ লেটার
  7. আইটি টেক
  8. আইন – আদালত
  9. আইন শৃংখলা বাহিনী
  10. আন্তর্জাতিক
  11. আবহাওয়া বার্তা
  12. ইসলাম
  13. উদ্যোগ এবং পরিবর্তন
  14. ওয়েবসাইট
  15. কবিতা

এক সংগ্রামী মায়ের গল্পগাথা

প্রতিবেদক
Alltime BD News24 .com
নভেম্বর ১৭, ২০১৮ ১২:৪০ পূর্বাহ্ণ

ফুটপাতে গাছের নিচে দুটো ইটের ওপর একটি চার্জার লাইট জ্বলছে। পাশে আরেকটি ইটের ওপর জ্বলছে মশার কয়েল। আনুমানিক ছয়-সাত বছরের একটি মেয়ে সেখানে বসে আপনমনে বইয়ের পাতা উল্টে পড়ছে। পড়তে পড়তে ক্ষণেক্ষণে তাকে মশা তাড়াতে দেখা যায়। পাশেই বসে তার পঙ্গু মা আওয়াজ করে উচ্চশব্দে পড়ার নির্দেশ দিচ্ছিলেন। মায়ের পায়ের কাছে দুটি ক্র্যাচ পড়ে থাকতে দেখা গেল।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ধানমন্ডি ৮ নম্বর ব্রিজের অদূরে ৭ নম্বর রোডে এ প্রতিবেদকের চোখে এ দৃশ্য ধরা পড়ে। এ রোডে দ্রুতবেগে ছুটে চলা প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের হর্ন ও হেডলাইটের আলো বারবার চোখে পড়লেও মেয়েটি আপনমনে পড়ে যাচ্ছিল।

কৌতূহলবশত এগিয়ে গিয়ে আলাপকালে জানা যায়, কোহিনুর নামের ওই পঙ্গু নারী বিধবা। ১০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন। ধানমন্ডির এই ফুটপাতই তার ঘরবাড়ি। নিজে ভিক্ষা করে চললেও তার দুই মেয়েকে পড়াশুনা করিয়ে ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চান।

অনেক কষ্টে বড় মেয়ে নিশি স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে এখন কলেজে পড়াশুনা করে। যে ছোট্ট মেয়েটি পড়াশুনা করছে এটি তার ছোট মেয়ে, নাম ফাতেমা। ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডে সুরভী স্কুলে পড়াশুনা করে। স্কুলে বিনামূল্যে পড়াশুনার সুযোগ থাকায় ছোট মেয়ের খাওয়া ও পোশাক-পরিচ্ছেদ ছাড়া তেমন খরচ নেই। বড় মেয়েটি নিজে টিউশনি করলেও মাস শেষে তাকে হাত খরচ দিতে হয়। এ কারণে তিনি ক্র্যাচে ভর করে ধানমন্ডি এলাকায় ভিক্ষা করেন।

তিনি জানান, ধানমন্ডি এলাকার কমবেশি সবাই তাকে বহু বছর ধরে চেনে। তাকে স্নেহ ও আদর করে। কথা বলতে না বলতেই এক ভদ্রমহিলা দু প্যাকেট বিরিয়ানি তাদের হাতে দিয়ে বড় মেয়ে কেমন আছে জানতে চোইলেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ওই পঙ্গু নারী জানালেন, নিজে কষ্ট করলেও মেয়ে দুটি তার ইচ্ছা পূরণ করে ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তার হতে পারলে তার দুঃখ ঘুচবে।

ফাতেমা নামের ওই শিশুটি মায়ের কথার ফাঁকে বলে, আপায় ইঞ্জিনিয়ার অইয়া খালি সুন্দর সুন্দর বাড়ির ডিজাইন করবো। আর আমি ডাক্তার অইয়া গরিব রোগীগো চিকিৎসা করুম।

ফাতেমার মা জানান, তিনি আর ভিক্ষা করতে চান না। কারও কাছ থেকে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলে ও কিছু আর্থিক সহায়তা পেলে মুদি দোকান দিয়ে ব্যবসা করে সংসারের খরচ ও দুই মেয়ের পড়ার খরচ চালাতেন। আর না পাওয়া পর্যন্ত এভাবেই ভিক্ষা করেেই চলতে হবে বলে জানান তিনি।

(Visited ২ times, ১ visits today)

সর্বশেষ - অর্থনীতি