প্রবাসীদের অর্থ পাঠাতে চার্জ দিতে হবে না : অর্থমন্ত্রী

0
512

Sharing is caring!

প্রবাসীদের বাংলাদেশে অর্থ পাঠাতে কোন চার্জ বা মাশুল দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

- Advertisement -

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের (রেমিটেন্স) পরিমাণ কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিল, যা আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে কার্যকর হবে।

সচিবালয়ের শনিবার (১৩ মে) অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান।

অনুষ্ঠানে ইআরএফের নেতৃবৃন্দ আগামী বাজেটকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। অর্থমন্ত্রীরও সে প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে তার অবস্থান তুলে ধরেন।

রেমিটেন্স কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্য। এটা যাতে বাড়ানো যায়…। এখন তারা টাকা পাঠালে আমরা চার্জ করি। প্রধানমন্ত্রী চার্জ না নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা এটা করব। তাদের (প্রবাসী) টাকা স্থানান্তরে যাতে কোন টাকা না লাগে।’

তিনি বলেন, ‘নানা কারণে প্রবাসী আয় কিছুটা কমবে। মধ্যপ্রাচ্যে অনেক জায়গায় বেতন-টেতন কমানো হয়েছে। বিদেশে যারা আয় করেন তারাও কিছু আয় বিদেশে রাখছেন, প্রথম দিতে সবটাই পাঠিয়ে দিতেন। এখন এটা হচ্ছে না।’

বাজেট হবে ৪ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে

বাজেট প্রস্তুতের কাজ চলছে জানিয়ে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মুহিত বলেন, ‘এটা (বাজেট) ৪ লাখ ৬/৭ বা ৮ হাজার কোটি টাকার মধ্যে থাকবে।’

পুঁজি বাজারের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পুঁজি বাজার ফটকা বাজারই ছিল, কোন নিয়মনীতি ছিল না। গত তিন বছর ধরে পুঁজি বাজারের অবস্থা ভাল, এটা ফটকা বাজার নয়। এর ফলাফলও আমরা দেখছি। সেখানে এখন বহুজাতিক কোম্পানিকে বলতে পারি তোমার শেয়ার ছাড়ো। সরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাজারে আসতে বলতে পারি।’

প্রতি বছর বাজেটে কালো টাকা সাদা করার একটা ব্যবস্থা থাকে- ইআরএফের একজন নেতা এ বিষয়টি উত্থাপন করতেই অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ওটা আমার বাজেটে বহুদিন ধরে নেই। ইট ইজ নাউ প্রোভাইড ই দ্য ল। কারো যদি আনডিক্লেয়ার মানি থাকে, হি ক্যান ডিক্লেয়ার এনি টাইম পেইং ন্যাসেসারি ফাইন ইত্যাদি ইত্যাদি। সেটাই গত ৩-৪ বছর ধরে চলছে।’

শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরিপ্রেক্ষিতে মুহিত বলেন, ‘শিক্ষায় এনরোলমেন্ট বেড়েছে। মানটা মোটেই বাড়েনি বলা হয়। এখন মানের দিকে নজর দেওয়া আমাদের প্রয়োজন। মানের দিকে নজরের দাবিটা এখন ছাত্র ও তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকেও আসছে। আমরা এ বিষয়ে সচেতন। পাঠ্যপুস্তক সংস্কার হচ্ছে।’

গবেষণার জন্য এবার বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও গবেষণার প্রয়োজন আছে। গবেষণা যে প্রয়োজনীয় এটা আমরা জানি, সেখানে খুব ভালভাবে জোর দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে।’

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আদায়ের পর তা সরকারের তহবিলে জমা নিশ্চিতে তকদারকি জোরদারের বিষয়ে মুহিত বলেন, ‘(মূসক) আদায় হয়, সব টাকা আসে না। এটা বন্ধ হয়ে যাবে খুব সত্বর। অনলাইন ছাড়াও আমার ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) চালু করতে যাচ্ছি। আশা করি আমরা এটি ৫০ হাজার স্থাপনায় এটি স্থাপন করতে পারব। এতে প্রতিষ্ঠানের সব লেনদেন রেকর্ড হবে। এটাকে কন্ট্রোল করার ব্যবস্থা আমার নিচ্ছি।’

রাজস্ব আয়ের ৪০ শতাংশ ভ্যাট থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

দুর্নীতি দূর ও বেশি কর আদায়ে এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক একসঙ্গে কাজ করতে পারে- ইআরএফের একজন সদস্য এ বিষয়টি উত্থাপন করলে অর্থমন্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানকে জবাব দিতে বলেন। চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রায়শই রিপোর্ট আসে বাংলাদেশে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অনুযায়ী কোটিপতির সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু সেভাবে ট্যাক্স জমা পড়ে না। দেয়ার ইজ এ মিসম্যাচ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও এনবিআর যদি একত্রে কাজ তবে ভাল হবে।’

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তো তোমাদের বলেছি। কামিং দেওয়ার হোয়াট দে উইল ডু। ইউনিভার্সিটি ছুটির সময় উইল ইমপ্লয় ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট টু অনলি ইন ঢাকা সিটি টু মেইক এ সার্ভে অব হাইজেস একসেট্রা। ওদের রিপোর্টের ভিত্তিতে যেখানেই ভাল বাড়ি আছে তার উপর একটা ট্যাক্স ধার্য করে নোটিশ দেওয়া হবে।’

অনুষ্ঠানে ইআরএফের সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল আগামী বাজেটে মানবসম্পদ উন্নয়নকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সবেচেয়ে বেশি। এ জনশক্তিকে জনসম্পর্কে রূপান্তরের জন্য একটি বাজেট দরকার। এ বিষয়ে এখনই নজর না দিলে জনশক্তি জনসম্পত্তিতে রূপান্তরিত না হয়ে জন সমস্যায় রূপান্তরিত হবে।’

তিনি প্রবাসীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‍সুবিধা দিতে বিশেষ কার্ড দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, দেশে ব্যবসা করা বহুজাতিক কোম্পানি ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে নিয়ে আসা, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করহার কমানো ও কার্যকর বন্ড মার্কেট চালুর প্রস্তাব দেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনসহ ইআরএফের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

(Visited 1 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here