বরিশালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়ে পুরস্কার জিতে নিয়েছে ২ হাজার ১৬৫ শিক্ষার্থী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রর ব্যতিক্রমী আয়োজন বইপড়া কার্যক্রমের আওতায় ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই পড়ার যোগ্যতা অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে বই তুলে দেওয়া হয়।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নগরীর ব্যাপ্টিষ্ট মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বই পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বসে শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
বরিশাল মহানগরের ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে চার ক্যাটাগরীতে ২ হাজার ১৬৫ জন শিক্ষার্থী পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়। স্বাগত পুরস্কার, শুভেচ্ছা পুরস্কার, অভিনন্দন পুরস্কার ও সেরাপাঠক পুরস্কার এই চারটি ক্যাটাগরীতে পুরষ্কার জিতে নেয় শিক্ষার্থীরা।
বিজয়ীদের মধ্যে স্বাগত পুরস্কার পেয়েছে ৮৭৫ জন, শুভেচ্ছা পুরস্কার পেয়েছে ৮১৬ জন, অভিনন্দন পুরস্কার পেয়েছে ৪৪৪ জন এবং সেরাপাঠক পুরস্কার পেয়েছে ৩০ জন শিক্ষার্থী। সেরাপাঠক পুরস্কার বিজয়ী ৩০ জনের মধ্যে লটারীর মাধ্যমে ৩ জনকে প্রদান করা হয় ২ হাজার টাকা সমমূল্যের বইয়ের একটি করে বিশেষ পুরস্কার। এ ছাড়া লটারীর মাধ্যমে দুইজন অভিভাবককে প্রদান করা হয় ২ হাজার টাকা সমমূল্যের বইয়ের একটি করে বিশেষ পুরস্কার।
বই পড়ে পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ, অভিনেতা আল মনসুর, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ গোলাম নকী, বরিশাল অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, গ্রামীণফোন বরিশালের এরিয়া ম্যানেজার এসএম ফিরোজ আল মামুন, ব্যাপ্টিষ্ট মিশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেরী সুর্য্যানী সমাদ্দার এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাবেক পরিচালক শরিফ মো. মাসুদ।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস বলেন, কেবল জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য পড়া লেখা করলে চলবে না। শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। এর জন্য প্রচুর বই পড়ার মাধ্যমে নিজেদেরকে আলোকিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা বই পড়ার প্রতি আগ্রহী হলে নেতিবাচক কর্মকান্ড থেকে তাদের দূরে রাখা সম্ভব হবে।
খায়রুল আলম সবুজ পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘তোমরা নিজেরা বই পড়বে এবং অন্যকেও বই পড়ার জন্য আহবান করবে।’
বক্তারা বলেন, মানুষের দু’টি চোখে দেখার পরিধি সীমিত। কিন্তু মনের চোখ দিয়ে আমরা যতদূর ইচ্ছা দেখতে পারি। বই পড়ার মাধ্যমে মনের চোখের আলো ফোটে। প্রত্যেক মানুষের ভিতরে অপরিমেয় সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রকাশ ঘটানোর জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই বেশি বেশি বই পড়তে হবে। একই সঙ্গে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, সন্তানদের কেবল উপদেশ না দিয়ে নিজেরা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। দেখবেন, সন্তানেরা এক একজন পড়ুয়া হয়ে উঠছে।