বাড়ছে মন্ত্রিসভার আকার, পূর্ণমন্ত্রীত্ব পাচ্ছেন জাহিদ ফারুক শামীম

0
299

Sharing is caring!

মন্ত্রিসভার আকার বাড়ছে। টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর গঠিত মন্ত্রিসভার আকার বাড়বে এবং ছয় মাসের মাথায় আবারও মন্ত্রিসভায় রদবদল করা হচ্ছে। এ সপ্তাহে না হলে আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে রদবদল করা হবে। মন্ত্রিসভার আকার বাড়াতে গত বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

- Advertisement -

এবার পুরনো মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্য থেকে দুই বা তিন জন স্থান পেতে পারেন। আর বাকি সবাই নতুন মুখ আসছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্রে জানা যায়, যেকোন সময় মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের তালিকা ঘোষণা করা হতে পারে। ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদলের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে।

প্রধানমন্ত্রী ও তার দফতরই নির্ধারণ করবে কখন মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ নেওয়া হবে। সংবিধানই প্রধানমন্ত্রীর এ ক্ষমতা নিশ্চিত করেছে। মন্ত্রিসভায় রদবদলের কাজটি পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভায় এমন নেতারাই আসবেন যারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতো রাতদিন সারাদেশ চষে বেড়াতে পারবেন। যাদের মধ্যে ইগোটিক সমস্যা থাকবে না। একেবারে নবীন না হলেও প্রবীণ হবেন না মন্ত্রিসভার এসব সদস্য। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য নবীণদের দায়িত্ব দিয়ে একদিকে উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখা অন্যদিকে নতুনদের অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য তাদের দায়িত্ব দেয়া হবে। যেন আগামীর বাংলাদেশ একটি অভিজ্ঞ রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারা টিম পায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেন, প্রবীণদের মূল সমস্যা হলো ইগোটিক। তারা তাদের গন্ডির বাইরে যেয়ে পরিশ্রম করতে চান না। অনেকে শেষ বয়সে নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাই প্রবীণ ও হেভিওয়েট কারো ব্যাপারে আগ্রহী নন প্রধানমন্ত্রী। আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়তে একটি শক্তিশালী নবীন রাষ্ট্রপরিচালনা করার টিম তৈরী করতে চান প্রধানমন্ত্রী। যাদের নির্দেশ দেয়ার সাথে সাথেই যেকোন কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, বিগত মন্ত্রিসভার সদস্যদের আমলনামা প্রধানমন্ত্রীর হাতে রয়েছে। তাদের অতীত কর্মকান্ডের ব্যাপারে খুব বেশি একটা সন্তুষ্ট নন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই মন্ত্রিসভার আকার বাড়লেও তাদের রাখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

এদিকে আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে রদবদল হবে বলে গুঞ্জন রয়েছে সচিবালয়ে। এর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে পরিবর্তন করা হচ্ছে না। নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং পানিসম্পদ উপ-মন্ত্রী এনামুল হক শামীমকে পূর্ণ মন্ত্রী করা হতে পারে।

আর বর্তমান পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীমকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী করা হতে পারে। তবে তাকে বিমান মন্ত্রণালয়ে দেয়ারও গুঞ্জন রয়েছে।

এছাড়া ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পূর্ণ নতুন মন্ত্রী দেয়া হতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে অন্য মন্ত্রণালয়ে দিয়ে তার স্থানে আসতে পারেন বর্তমান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এছাড়া মন্ত্রিসভায় নতুন করে যুক্ত হতে পারেন কমপক্ষে আরও ১১ জন নতুন মুখ। এদের মধ্যে পুরনো মন্ত্রিসভার দুই তিন জন থাকতে পারেন। আর বাদ বাকি সবাই নতুন মুখ আসবেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এবং দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, চট্টগ্রামের ফজলে করিম এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুর মন্ত্রিসভায় স্থান পাবার বিষয়ে গুঞ্জন রয়েছে।

এছাড়া দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার নাম আলোচনায় আসছে। টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভায় আসতে পারেন, এমন নেতাদের মধ্যে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন দলের দুই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজান তিনি।

গত মে মাসে তিন জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বভার কমেছে। মন্ত্রণালয় পরিবর্তন করে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। এতে টেকনোক্র্যাট কোটায় ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া মোস্তফা জব্বারকে কেবল ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে রাখা হয়েছে। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা জুনাইদ আহমেদ পলক একই দায়িত্বে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা তাজুল ইসলাম এখন কেবল স্থানীয় সরকার বিভাগের মন্ত্রীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যও এখন কেবল পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।’

(Visited 1 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here