পাহাড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপরূপ লীলাভূমি।

0
651

Sharing is caring!

ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেষা শেরপুরের শ্রীবরদীর গারো পাহাড় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপরূপ লীলাভূমি। বিশেষত এখানকার নেওয়াবাড়ি টিলায় প্রকৃতি তার সৌন্দর্য্যের ঝাঁপি খুলে দিয়েছে উজাড় করে। এতে নেওয়াবাড়ি টিলায় পর্যটনের অপার সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।

- Advertisement -

 

গারো পাহাড়বাসীদের সূত্রে জানা গেছে, জনশ্রুতি আছে এখানে অনেক আগেই একটি বাড়ি ছিল। নাম ছিল নেওয়াবাড়ি। সেই থেকেই এ টিলার নামকরণ হয় নেওয়াবাড়ির টিলা। তবে এখন আর বাড়ি নেই।
অন্য এক তথ্য মতে, গাছপালা আর লতাপাতাকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় ‘নেওয়া’। এ কারণেই টিলাটি নেওয়াবাড়ি টিলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আর প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেয়া প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির লতা ও বৃক্ষ রয়েছে এ পাহাড়ি এলাকায়।

 


ময়মনসিংহ বন বিভাগের বালিজুড়ি রেঞ্জের আওতায় এ টিলা। অনেক বছর এখানকার গাছগুলো ভূমিদস্যুরা কেটে ন্যাড়া করে দিয়েছিল। পরে আশির দশকে গড়ে ওঠে উডলট বাগান। এ টিলার চারদিকে স্থানীয় বাঙালিদের পাশপাশি গারো, কোচ, হাজং, বানাই গোত্রের লোকজন বাস করে। এদের সবার মধ্যে রয়েছে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক ও সহমর্মিতা।

 

টিলার দক্ষিণ পাশে আছে ছোট পাহাড়ি ঝরনা। কোথাও গহীন জঙ্গল। আবার কোথাও কোথাও দেখা যায় পাহাড়ের চূড়া। আরো দেখা যায় ওপারের সীমানায় রক্তিম সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। পায়ে হেঁটে চারদিকে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আছে মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ। পাহাড়ের বিরাট এলাকা জুড়ে আছে আকাশমণি, বেলজিয়াম, ইউক্যালিপটাস, রাবার গাছ, ঔষুধি গাছ ও কড়ই ছাড়াও নানা জাতের লতাগুল্ম আর বাহারি গাছ গাছালি; যা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। বিশেষ করে এ টিলার পাহাড়ে উঠে এলে দূরের আকাশকেও কাছে মনে হয়। সবুজ ও হালকা নীলের নৈসর্গিক এই দৃশ্য চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। স্থানীয় অধিবাসীরা মনে মনে করেন, প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের লীলাভূমি নেওয়াবড়ি টিলায় পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে স্থানীয়রাও আর্থিকভাবে উপকৃত হবে। পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব পাবে।

 

এলাকাবাসী মনে করে, এ ব্যাপারে সরকারের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া জরুরি। এই পাহাড়ি জনপদে পর্যটন শিল্প গড়ে ওঠলে পিছিয়ে পড়া নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চলের উন্নয়নের পাশাপাশি অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

 

যেভাবে আসবেন: শেরপুর জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে এ টিলার অবস্থান। এখানে আসতে হলে নিজস্ব যানবাহন বা সিএনজি যোগে জেলা শহরের শাপলা চত্বর থেকে শ্রীবরদী পৌরশহর হয়ে বালিজুড়ি রেঞ্জ অফিসে আসতে হবে। রেঞ্জ অফিসের পশ্চিম পাশেই এ টিলার অবস্থান।

 

কোথায় থাববেন: শ্রীবরদী উপজেলা সদরের ডাক বাংলোতেও থাকতে পারেন। থাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমতি লাগবে। এছাড়া শেরপুর জেলা সদর ও আশপাশে বেশ কয়েকটি খাওয়ার হোটেল ও থাকার জন্য মোটামুটি ভালো মানেরম গেস্টহাউজ বা আবাসিক হোটেল রয়েছে। যেখানে নিশ্চিন্তে রাত কাটানো যায়। তবে পাহাড়ি পরিবেশে থাকতে চাইলে নেওয়াবাড়ি টিলা থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে বনফুল নামে একটি আবাসিক হোটেল।

 

সতর্কতা: নেওয়াবাড়ির টিলার আশপাশের পাহাড়ি এলাকার সন্নিকটেই ভারতীয় সীমান্ত। তাই পাহাড়ের ভেতর দিয়ে বেশি দূর এগোনো ঠিক হবে না। তাছাড়া সন্ধ্যার পর পাহাড়ের ভেতরে অবস্থান করাও ঠিক হবে না। কারণ এ অঞ্চলে বন্যহাতির উপদ্রব রয়েছে।

(Visited 9 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here