দৃস্টান্ত স্থাপন করলেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

0
422

Sharing is caring!

আধুনিকতার ছোয়া আর গ্লোবালাইজেশনের যুগে মানুষ অনেকটাই যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি ডিজিটালাইজেশনের সাথে সাথে ব্যস্ততার এক চরম ছোবলে সবাই কেবল সামনে চলেছে। পিছু হটছে শুধুই মানবতা। এমন মন্তব্য দীর্ঘদিন যাবত অনেকেই করে আসছেন। তবে সবকিছুর পরেও ‘আমরা মানুষ’ এমন একটি মানবিক দৃস্টান্ত স্থাপন করলেন বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীর। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে একজন ভিখারীর পার্শ্বে দাড়ালেন তাকে স্বাবলম্বি করার প্রয়াস নিয়ে। আর এতে শুধু একজন স্বাবলম্বি হয়েছে এমনই নয় সমাজে বিত্তবানদের কাছে এক অনন্য বার্তা বয়ে এনেছে। প্রত্যেক বিত্তবান যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে এভাবে সামাজিক কর্মকন্ড সম্পাদন করতেন তাহলে খুব সহজেই পাল্টে যেত দেশের চিত্র। একজন সরকারী কর্মকর্তা হয়েও নিজ কর্ম এলাকায় সরকারী বরাদ্দ ছাড়াই এমন জনসেবার দৃস্টান্তে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন।

- Advertisement -

এভাবে দুইমাস পেরুনোর পর গতকাল বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীর সরেজমিনে খোজখবর নিতে গিয়ে দেখেন, সেই বেলুয়ার বেগম এখন আর ভিক্ষুক নন। তিনি রীতিমত একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এতে আনন্দিত হয়ে তিনি বেলুয়ার বেগমের সাথে ছবিতুলে ফেজবুকে দিলে বেশ সাড়া পরে। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন ‘‘জনৈক বিলকিস ভানু( বেলুয়ার বেগম ডাক নাম) এসেছিল ভিক্ষা নিতে, ভিক্ষা না দিয়ে ভিক্ষা না করার শর্তে ওয়াদা দিয়েছিলাম তার জন্য কিছু করব, প্রস্তাব দিলাম সে ব্যবসা করতে পারবে কিনা, উনি বললেন চা, বিড়ি সিগারেট, পান, ডিম বিক্রয় করতে পারবেন। উনি রাজি হওয়ায় সম্পুর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তাকে একটি ছোট দোকান ঘর নির্মান করে দেই। অদ্য দোকান ঘরটি দেখতে গেলে বিলকিস ভানু কে দোকানে বসা অবস্থায় পাই। বিলকিস ভানু সকাল হতে ১০ টি সিদ্ধ ডিম, দুই হালি কলা, ১২ কাপ চা, কিছু বিড়ি সিগারেট ও বিস্কিট বিক্রয় করেন। কিছু লাভ ও হয়েছে। তার চোখে মুখে হাসি দেখতে পেলাম।বিলকিস বেগমকে ছবি তোলার কথা বললে রাজি হলেন। বিলকিস বেগমের জন্য সকলে দোয়া করবেন যেন তাকে আর ভিক্ষা করতে না হয়’’।

সরেজামিনে খোজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে নগরীর রূপাতলি এলাকার ভিক্ষুক বিলকিস ভানু (বেলুয়ার বেগম ) ভিক্ষা নিতে বরিশার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবীরের নিকট যায়। এ সময় তাকে ভিক্ষা ছেড়ে ব্যবসা করে সাবলম্বি হওয়ার প্রস্তাব দিলে সে রাজি হয়। এরপরে ইউএনও তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কিছু অর্থ এবং তার এক স্বজনের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে তাকে একটি দোকানঘর নির্মাণ করে দেন। মালামাল উঠানোর জন্য কিছু টাকা প্রদান করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বেলুয়ার বেগমে ভিন্ন জীবন। অল্প কিছু মালামাল নিয়ে সামান্য কিছু বিক্রি। যতসামান্য লাভ হয় তা দিয়েই সে চলতে শুরু করেন। তবে দোকানে আরো কিছু মালামাল উঠাতে পারলে হয়তে আরো ভালো হতো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ হুমায়ুন কবীর বলেন, আমি তকে কিছু অর্থ দিয়েছিলাম ভিক্ষা ছেড়ে ব্যবসা করা শর্তে। আজ দেখলাম সত্যিই সে স্বাবলম্বি হওয়ার চেস্টা করছে। শিঘ্রই তাকে দোকানে মালামাল উঠানোর জন্য আরো কিছু সহযোগীতা করবো।

(Visited 19 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here