ইসিতে ঐক্যফ্রন্টের যেসব অভিযোগ

0
155

Sharing is caring!

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ‘ভোট ডাকাতি’ ও ‘তাণ্ডব’ হয়েছে—এ অভিযোগসহ মোট ১৭টি অভিযোগ-সংবলিত স্মারকলিপি নির্বাচন কমিশনে দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। নিজেদের প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার পর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।

- Advertisement -

ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) পাঁচ পৃষ্ঠার স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এতে জোটের নেতারা ভোটের দিন ও তার আগের দিনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সরকারদলীয় লোকজনের ‘ভোট ডাকাতি ও তাণ্ডবের’ চিত্র তুলে ধরেন। তাঁদের প্রায় প্রতিটি অভিযোগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়ী করা হয় এবং বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে তাঁরা প্রতিকার পাননি বরং এই বাহিনী হামলা-মামলায় অংশ নিয়েছিল। এ ছাড়া সেনাবাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রাখার অভিযোগ এনে ঐক্যফ্রন্ট বলেছে, সেনাবাহিনী নামার পর বিএনপি/ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন, হামলা-মামলা বেড়ে যায়।

অভিযোগের কিছু অংশ হলো, নির্বাচনের আগের রাতে দেশে ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি করে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা, ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যেতে বাধা প্রদান ও ভয় দেখানো, পোলিং এজেন্টদের ভয় দেখানো, কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়াসহ কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া ও মারধর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় জাল ভোট দেওয়া ও ভোটারদের নৌকায় সিল মারতে বাধ্য করা, বেআইনিভাবে মধ্যাহ্নবিরতি, জুডিশিয়াল ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্বাচনী দায়িত্বে নিষ্ক্রিয় রাখা, অসংখ্য ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট কাস্ট, পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীদের দেখানোর জন্য অন্য এলাকা থেকে লোক এনে লাইনে দাঁড় করানো, আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ—এসব অনিয়মে নির্বাচন কমিশনের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকা।এসব অভিযোগের বাইরেও তফসিল ঘোষণার পর থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের ওপর বিভিন্ন পর্যায়ে হয়রানি, হামলা-মামলা ও নির্বাচন কমিশনের সরকারের প্রতি ‘পক্ষপাতমূলক আচরণের’ বিবরণ দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ইসিকে দায়ী করে ঐক্যফ্রন্ট জানায়, তফসিল ঘোষণা পেছানোসহ নির্বাচন পেছানোর দাবিও কমিশন প্রত্যাখ্যান করে, নির্বাচনের দুই মাস আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করে সরকারদলীয় লোকজনদের নিয়োগ দেয়, দলীয় মনোনয়ন বিতরণকালে ইসি সচিব ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, ঐক্যফ্রন্টের ১৮ জনের প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশনের রহস্যজনক ভূমিকা, গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার, হয়রানি ও প্রার্থীদের আটকে কমিশনের পদক্ষেপ না নেওয়া, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নিরুৎসাহিত করা, প্রচারণায় বাধা, প্রশাসন ও পুলিশে রদবদল না করা, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ, সরকারি দলের আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ সব জায়গায়ই তারা ইসির নীরব ভূমিকা দেখতে পেয়েছিল।

ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্মারকলিপি দিতে ইসিতে যান কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান এবং গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু।

(Visited 1 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here