ওসি প্রদীপের ২২ মাসে ১৪৪ ক্রসফায়ার

0
229

Sharing is caring!

‘রক্ত পিয়াসী’ ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সময়ে টেকনাফে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে বলে তথ্য এসেছে। এতে মারা গেছেন ২০৪ জন।

- Advertisement -

ক্রসফায়ারে নিহত সবাইকে দেওয়া হয়েছে মাদক কারবারি অথবা অবৈধ অস্ত্র বহনকারীর তকমা। অথচ সাধারণ মানুষ বলছে, ক্রসফায়ারে নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন নিরীহ মানুষ। আর এসবই ঘটেছে প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফ থানার ওসি হয়ে আসার পর গত ২২ মাসে।

স্থানীয়রা বলছে, ‘রক্ত পিয়াসী’ বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কারান্তরিণ ও সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার খবরে টেকনাফ জুড়ে হাজারো নির্যাতিত পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে। স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মধ্যে।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ আসামি হয়ে কারাগারে যাওয়ায় শোকরানা নামাজ আদায় ও মিলাদ পড়িয়েছেন বলেও জানিয়েছেন অনেকে।

ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে প্রায় দুই বছর ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে প্রদীপের বিরুদ্ধে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানি, নির্যাতন ও লুটপাটের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে রয়েছে থানায় আটকে রেখে নারীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগও।

স্থানীয়দের দাবি, সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার মাদক নির্মূলের পরিবর্তে বরং টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করেছেন। কিছু কিছু ক্ষুদ্র মাদক পাচারকারীকে ক্রসফায়ারে দিয়ে স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে প্রদীপের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ইয়াবা গডফাদারের। বিনিময়ে প্রদীপ পেয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সরেজমিন নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই এসব অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।

সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গত বৃহস্পতিবার সাত দিনের জন্য র‍্যাব হেফাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গত বৃহস্পতিবার ওসি প্রদীপকে আটকের খবরে টেকনাফ থানার সামনে জড়ো হয় শত শত মানুষ। সেখানে উপস্থিত হন শতাধিক ভুক্তভোগী। তারা ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় ও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ঘটনা সবার সামনে বর্ণনা করেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে মামলা করার কথাও জানান তারা।

অপরদিকে সাবেক ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের মামলা আদালত গ্রহণ করবে না বলে টেকনাফের গ্রামে গ্রামে প্রচার করে বেড়াচ্ছে তার ঘনিষ্ঠজনরা।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও কক্সবাজার আইন কলেজের প্রভাষক ছৈয়দ মো. রেজাউল রহমান বলেন, হত্যার শিকার অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের পরিবারের মতো ক্ষতিগ্রস্ত সবারই মামলা করার সমান অধিকার রয়েছে। দেশে আইনের শাসন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের নির্ভয়ে থানায় বা আদালতে মামলা করা উচিত।

র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা চাইলে আদালতে মামলা করতে পারেন। এছাড়া এ বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

(Visited 1 times, 1 visits today)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here