মুসলিম শিশুদের কিছু নামের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে চীনের জিংজিয়াং প্রদেশে। সন্তানের এমন কোনো নাম রাখা যাবে না, যা শুনে মনে হতে পারে সে ইসলাম ধর্মের অনুসারী। দেশটির সরকার দাবি করছে, চীনে উগ্রপন্থাকে রুখতেই এমন সিদ্ধান্ত।
‘ইসলাম’, ‘কোরআন’, ‘মক্কা’, ‘জেহাদ’, ‘ইমাম’, ‘সাদ্দাম’, ‘হজ’, ‘মদিনা’র মতো কিছু নামে চীনে ওই প্রদেশে রাখা যাবে না। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির এসব নামের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
দেশটির সরকার বলেছে, উপরিউক্ত নামগুলো রাখা হলে শিশুরা প্রায় সব রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, শিক্ষার সুযোগ, সামাজিক সেবা থেকেও তারা বঞ্চিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
১ এপ্রিল এক নির্দেশিকা জারি করে দেশটির সরকার জানিয়ে দিয়েছে, জিংজিয়াংয়ে কী কী করা যাবে আর কী কী করা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে হবে। নামের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও ওই তালিকায় সংযোজন করা হয়।
দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জিহাদ বা এমন নামগুলো দিয়ে কারও নাম রাখার অনুমতি দেওয়া হবে না। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে নামটির অভিব্যক্তি…।’ ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নিষিদ্ধ এসব নাম কারও হলে তারা পারিবারিক নিবন্ধন পাবেন না। যাই হোক, মোহাম্মদের মতো নামগুলো ‘মূলধারার’ বলে বিবেচিত বা গ্রহণযোগ্য।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বলছে, উগ্রবাদকে মোকাবিলার দাবি করে চীনের কর্মকাণ্ডকে ‘অবাস্তব নিষেধাজ্ঞা’র হিসেবে নিন্দা করেছে। এ সংস্থার চীনের পরিচালক সোফি রিচার্ডসন বলেন, নতুন এই নিষেধাজ্ঞা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে খর্ব করতে পারে।
চিনের জিংজিয়াং প্রদেশে বেশির ভাগ মানুষই মুসলমান। নিজেদের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিভিন্ন সময় সরব হন এ প্রদেশের বাসিন্দারা। কখনো কখনো সেই দাবি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় চীন সরকারের কাছে। সূত্রের খবর, তাই আরও কড়া হতে চাইছে সরকার।
শুধু নাম রাখার ক্ষেত্রেই নয়, এর আগে চীনে লম্বা দাড়ি রাখা নিয়েও কিছুদিন আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।